Jakariya1234 Subscriber 2 years ago |
একটি কাক। খুব দ্রুত উড়ে যাচ্ছে। মুখে একখানা তাজা রুটি। মনে হয় কিছুক্ষণ পূর্বে বানানাে। কাকটির উড়া দেখে যে কেউ ভাববে, তার জন্য এমন কোনাে সময় নির্দিষ্ট আছে, যার মধ্যে তাকে আপন গন্তব্যে পৌছতেই হবে। এ জন্যেই বােধ হয় তার এত তাড়াহুড়া-এত ব্যস্ততা।
বিখ্যাত বুযুর্গ হযরত মালেক বিন দিনার (রা.) হজ্জ্ব শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে একটি কাকের চলার ভঙ্গি দেখে তার মনে সন্দেহ হলাে। ভাবলেন, নিশ্চয়ই এর কোনাে কারণ আছে। রহস্য আছে। এ রহস্য আমাকে উদঘাটন করতে হবে। তিনি কৌতুহলী মন নিয়ে কাকটির পিছনে দ্রুত চলতে লাগলেন। কিছুদূর যাওয়ার পর দেখলেন, কাকটি উড়তে উড়তে একটি গর্তের মধ্যে ঢুকে পড়ল।
গল্প বিশ্বাস যেমন ফলাফল তেমন। কাকের ছবি।
ছবিঃ কাক। কাককে পাখিজগতের সর্বাপেক্ষা চালাক পাখি বলে মনে করা হয়। – উইকিপিডিয়া!
হযরত মালেক বিন দিনার (রা.) বলেন, সেখানে গিয়ে আমি একটি বিস্ময়কর ঘটনা প্রত্যক্ষ করলাম। দেখলাম, সেই গর্তের মধ্যে হাত-পা বাধা অবস্থায় এক লােক চিৎ হয়ে পড়ে আছে। আর কাকটি রুটি ছিড়ে ছিড়ে তাকে খাওয়াচ্ছে। একজন অসুস্থ স্বামীর মুখে তার স্ত্রী যেভাবে সােহাগ ভরে খাবার উঠিয়ে দেয়, কাকটির অবস্থা দেখে আমার তাই মনে হলাে।
বেশ কিছুক্ষণ এ দৃশ্য অবলােকন করার পর আমি যখন আরেকটু অগ্রসর হলাম, তখন কাকটি উড়ে গেল। আমি লােকটির নিকটে গেলাম। আমাকে দেখে সে কাঁদতে লাগল। আমি বললাম, আপনি কে? এখানে কিভাবে এলেন? আপনার অবস্থাই বা এমন কেন?
উত্তরে সে বলল, আমি হজ্জ্ব করে দেশে ফিরছিলাম। পথিমধ্যে ডাকাতদল আমার সমুদয় মাল-পত্র ও টাকা-পয়সা কেড়ে নেয়। অতঃপর যাওয়ার সময় আমাকে হাত-পা বেঁধে এ গর্তের মধ্যে ফেলে রেখে চলে যায়।
ডাকাত দল চলে যাওয়ার পর একই অবস্থায় আমার পাঁচ দিন কেটে যায়। ক্ষুধার যন্ত্রণায় চোখে অন্ধকার দেখতে থাকি। মনে হলাে, এই বুঝি আমার প্রাণবায়ু চিরদিনের মতাে বের হয়ে চলে যাবে। কিন্তু খােদার অপরিসীম দয়ায় এখনাে আমি বেঁচে আছি।
পাঁচদিন অতিবাহিত হওয়ার পর আমি এ বলে প্রার্থনা করলাম, হে মহান সেই সত্ত্বা, যিনি আপন গ্রন্থ পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন“যখন কোনাে অসহায় ব্যক্তি তার নিকট প্রার্থনা করে, তখন তিনি তার ডাকে সাড়া দেন এবং তার সমস্যা দূর করে দেন।” হে আল্লাহ! আজ আমি অসহায়। ডাকাতদল আমার সর্বস্ব লুট করে নিয়ে গেছে। এ নির্জন গুহায় কোনাে লােকজনও হয়ত আসবে না। হে দয়াময় খােদা! আমার অসহায় অবস্থা তুমি ভাল করেই প্রত্যক্ষ করছ। একমাত্র তুমি ছাড়া আমার আর কোনাে সাহায্যকারী নেই। মেহেরবানী করে তুমি আমার জীবন রক্ষার ব্যবস্থা কর এবং আমাকে এ বিপদ থেকে উদ্ধার কর। আমার প্রতি দয়া প্রদর্শন কর।”
আমি যেদিন দোয়া করেছিলাম, সেদিন থেকে দয়াময় আল্লাহ আমার জন্য এ কাকটি নিযুক্ত করে দিয়েছেন। কাকটি প্রত্যহ তিনবার আহারের সময় আমার নিকট খাবার নিয়ে আসে এবং নিজেই ঠোট দিয়ে ছিড়ে ছিড়ে খাইয়ে দিয়ে আবার চলে যায়।
ইতিমধ্যে আমি তার হাত পায়ের বাধন খুলে দিয়েছি। বাধন মুক্ত হয়ে সে আমাকে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কিছুক্ষণ কাঁদল। তারপর বলল, মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করার মতাে ভাষা আমার নেই। তিনি আমাকে একটি কাকের মাধ্যমে আহারের ব্যবস্থা করেছেন। আবার আমাকে উদ্ধারের জন্য আপনাকে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
এরপর আমরা লােকালয়ের দিকে ফিরে এলাম। পথিমধ্যে আমাদের ভীষণ পিপাসা হলাে। কিন্তু সাথে কোনাে পানি ছিল না। তাই পিপাসায় কাতর হয়ে আমরা এদিক সেদিক পানি খোঁজ করতে লাগলাম। হঠাৎ দূরে মাঠের মধ্যে একটি কূপ দেখতে পেলাম। সাথে সাথে আমরা এও দেখলাম যে, সেখানে এক পাল হরিণ ঘােরাফেরা
Alert message goes here